Home
27 February 2025

হৃদপিণ্ডের বেধে যাওয়া ধমনী (এথেরোস্ক্লেরোসিস): নিজেকে রক্ষা করার উপায়

হৃদপিণ্ডের বেধে যাওয়া ধমনী (এথেরোস্ক্লেরোসিস): নিজেকে রক্ষা করার উপায়
Author

Dr. Asif Ahmed Bin Moin

Author

এথেরোস্ক্লেরোসিস হল একটি সাধারণ অবস্থা যেখানে ধমনীতে ফ্যাটি পদার্থ জমে যায় এবং ধমনী সংকীর্ণ হয়ে যায়। এই সংকীর্ণ ধমনী হৃদপিণ্ডে রক্ত প্রবাহকে বাধাগ্রস্ত করে এবং হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের মতো গুরুতর সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।

কেন হয় এথেরোস্ক্লেরোসিস?

এথেরোস্ক্লেরোসিসের অনেক কারণ থাকতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে:

  • উচ্চ কোলেস্টেরল: রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি থাকলে ধমনীতে প্লেক জমতে পারে।
  • উচ্চ রক্তচাপ: উচ্চ রক্তচাপ ধমনীর দেয়ালকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং প্লেক জমার জন্য একটি উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করে।
  • ধূমপান: ধূমপান ধমনীকে সংকীর্ণ করে এবং রক্ত জমাট বাঁধার ঝুঁকি বাড়ায়।
  • ডায়াবেটিস: ডায়াবেটিস রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ায় এবং ধমনীকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
  • পরিবারিক ইতিহাস: যদি আপনার পরিবারে কারও এথেরোস্ক্লেরোসিস থাকে, তাহলে আপনারও এই রোগ হওয়ার ঝুঁকি বেশি।
  • বয়স: বয়স বাড়ার সাথে সাথে এথেরোস্ক্লেরোসিসের ঝুঁকি বাড়ে।
  • অন্যান্য কারণ: মোটা হওয়া, শারীরিকভাবে অসক্রিয় থাকা এবং কিছু ধরনের প্রদাহজনক অবস্থাও এথেরোস্ক্লেরোসিসের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

এথেরোস্ক্লেরোসিসের লক্ষণ

প্রাথমিক পর্যায়ে এথেরোস্ক্লেরোসিসের কোনো লক্ষণ নাও থাকতে পারে। তবে যখন ধমনী অনেক বেশি সংকীর্ণ হয়ে যায়, তখন নিম্নলিখিত লক্ষণ দেখা দিতে পারে:

  • বুকে ব্যথা: শারীরিক কাজ করার সময় বা চাপের সময় বুকে ব্যথা বা অস্বস্তি অনুভূত হওয়া।
  • শ্বাসকষ্ট: শারীরিক কাজ করার সময় শ্বাসকষ্ট হওয়া।
  • পায়ে ব্যথা: হাঁটার সময় পায়ে ব্যথা হওয়া এবং বিশ্রাম নিলে ব্যথা কমে যাওয়া।
  • মাথা ঘোরা: রক্তচাপ কমে যাওয়ার কারণে মাথা ঘোরা।

এথেরোস্ক্লেরোসিস থেকে নিজেকে রক্ষা করার উপায়

  • সুস্থ খাদ্যাভ্যাস: ফল, সবজি, পুরো শস্য এবং চর্বিহীন প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খান।
  • নিয়মিত ব্যায়াম: সপ্তাহে কমপক্ষে 150 মিনিট মধ্যম তীব্রতার ব্যায়াম করুন।
  • ধূমপান ত্যাগ করুন: ধূমপান হৃদরোগের একটি প্রধান কারণ।
  • ওজন নিয়ন্ত্রণ করুন: অতিরিক্ত ওজন হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
  • রক্তচাপ এবং কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করুন: নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন এবং ওষুধ সেবন করুন (যদি প্রয়োজন হয়)।
  • ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করুন: যদি আপনার ডায়াবেটিস থাকে, তাহলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা খুবই জরুরি।
  • মানসিক চাপ কমান: যোগ, ধ্যান বা অন্য কোনো শিথিলকরণ কৌশল অবলম্বন করুন।

উপসংহার

এথেরোস্ক্লেরোসিস একটি গুরুতর সমস্যা হলেও, সুস্থ জীবনযাপন এবং নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শের মাধ্যমে এটি প্রতিরোধ করা সম্ভব। যদি আপনি উপরোক্ত কোনো লক্ষণ অনুভব করেন, তাহলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।